Society for Amateur Astronomers of Bangladesh

পারসেইড উল্কাবৃষ্টি

অনেক সময় গ্রহানু বা ধূমকেতুর অংশবিশেষ মাধ্যাকর্ষণের টানে পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে। পৃথিবী ঐ বিচ্ছিন্ন টুকরোগুলোর মুখোমুখি হলে এরা বায়ুমণ্ডলের ঘর্ষণে রাতের আকাশকে আলোকিত করে তোলে। এদেরকে সাধারণত উল্কা বলা হয়। বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে এই উল্কার আধিক্য থাকে তুলনা মূলক বেশি, একটি বিশেষ সময়ে আকাশের বিশেষ এক অঞ্চলে ঘন্টায় ১০ বা তদূর্ধ্ব উল্কাও দেখা যায়। একেই বলে উল্কাবৃষ্টি।

Perseid_MS

ঠিক এরকম একটি উল্কাপাত দেখা যাবে আগামী ১১-১৩ আগস্ট মধ্যরাতের পর থেকে ভোর পর্যন্ত। আকাশ অন্ধকার মেঘমুক্ত থাকলে পারসিয়াস নক্ষত্রমন্ডল থেকে প্রতি ঘন্টায় ৬০ থেকে ১০০টি উল্কা পতন দেখা সম্ভব হবে। পারসিয়াস নক্ষত্রমন্ডলের নামানুসারে এই উল্কাবৃষ্টির নাম পারসেইড মেটিওর শাওয়ার । কারণ এই উল্কাবৃষ্টির রেডিয়ান্ট পয়েন্ট পারসিয়াস নক্ষত্রমন্ডলেই। সুইফ্‌ট টার্টল ধূমকেতু থেকে এই উল্কাবৃষ্টির উৎপত্তি। প্রতি বছর আগস্টের ৯-১৩ পৃথিবী তার কক্ষপথে চলার সময় সুইফ্‌ট টার্টল ধূমকেতুর কক্ষপথের মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করে। সুইফ্‌ট টার্টল ধূমকেতুর ফেলে যাওয়া  ছোট ছোট টুকরো বা ডেবরি থেকেই উৎপত্তি ঘটে উল্কার। ধূমকেতুটি ১৩৩ বছরে একবার নিজ কক্ষপথের ঘূর্ণন সম্পন্ন করে।

মধ্যরাতের পর আকাশের উত্তর-পূর্ব দিকে দিগন্ত থেকে ৩০-৫০ ডিগ্রি উপরে পারসিয়াস নক্ষত্রমন্ডল দেখা যাবে। পর্যবেক্ষণে আগ্রহীদের চোখ রাখতে হবে সেদিকেই। তবে উল্কাগুলোকে উত্তর-পূর্ব আকাশ জুড়েই ছুটোছুটি করতে দেখা যাবে। সঙ্গে রাখতে পারেন খাতাকলম, ঘড়ি, রেড লাইট টর্চ। ছবি তুলতে চাইলে, DSLR কেমেরায় ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স ব্যবহার করে ফিক্সড ট্রাইপডে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড এক্সপোজারে শুট নিতে পারেন। এক্সপোজার খুব বেশি হলে স্টার ট্রেইল চলে আসবে ফলে উল্কার লাইট ট্রেইল ভালোভাবে বোঝা যাবেনা।

এই অভূতপূর্ব মহাজাগতিক ঘটনা দেখতে আপনিও চোখ রাখুন ১১-১৩ আগস্ট মধ্য রাতে পূর্ব দ্বিগন্তে।

লিখেছেন: মোঃ আবিদ খান

Leave a Reply

Your email address will not be published.